বৈশাখের সংক্রান্তিতে এবার উৎসব বন্ধ সতীপীঠে , মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্ৰামে বিষন্নতা

9th May 2020 বর্ধমান
বৈশাখের সংক্রান্তিতে এবার উৎসব বন্ধ সতীপীঠে , মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্ৰামে বিষন্নতা


নিজস্ব সংবাদদাতা ( বর্ধমান ) : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে আতঙ্ক গোটা বিশ্বে । ভারতেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ‍্যা । রাজ‍্যজুড়ে জারি রয়েছে সতর্কতা । তাই এবার চিরাচরিত প্রথায় ছেদ পড়লো । বৈশাখের সংক্রান্তিতে উৎসব বন্ধ করা হল সতীপীঠ পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্ৰামে । দেবী যোগাদ‍্যার পুজো ঘিরে লাখো মানুষের সমাগম হয় প্রতিবছর । শহর বর্ধমান থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে এই সতীপীঠ । কথিত আছে , এখানে সতীর ডান পায়ের আঙুল পড়েছিলো । দেবী এখানে যোগাদ‍্যা নামে পূজিতা হন । লকডাউনের জন‍্য জমায়েত সম্পূূর্ণ নিষিদ্ধ । তাই কাটোয়া মহকুমাশাসকের দপ্তরে বৈঠকের পরেই এবার উৎসব বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে । এলাকায় প্রচার ও শুরু হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে । 

প্রতিবছর বৈশাখের সংক্রান্তিতে ক্ষীরগ্ৰামের ক্ষীরদিঘীর জল থেকে তোলা হয় দেবী যোগাদ‍্যাকে । মূল মন্দিরে তুলে এনে শুরু হয় পুজো । আবার পুজোর শেষে ওইদিনেই ক্ষীরদিঘী র জলে ডুবিয়ে দেওয়া হয় দেবী মূর্তিকে । সতীপীঠে এই সংক্রান্তির পুজো ঘিরে লাখো ভক্ত যেমন জমায়েত করেন তেমনি এলাকাজুড়ে বিশাল মেলাও বসে । রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিশকর্মী সহ মন্দির ট্রাস্ট্রের সদস‍্যদের । সাংস্কৃতিক নানা অনুষ্ঠান ও হয় এলাকায় । সতীপীঠ সরগরম হয়ে ওঠে সংক্রান্তিতে । কিন্তু এবার একেবারে ভিন্ন পরিস্থিতি । হবে না উৎসব , মেলা । করোনা ভাইরাসের থাবায় বিপর্যস্ত স্বাভাবিক সমস্ত নিয়ম , জীবনযাত্রা । প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পরেই সতীপীঠ জুড়ে বিষন্নতার ছাপ । সমস্ত মন্দিরের দরজাই সর্বত্র বন্ধ রাখা হয়েছে । জমায়েত আটকাতে সতীপীঠেও সংক্রান্তির পুজো সহ উৎসব বন্ধ রাখা হবে প্রশাসনিক নির্দেশ মেনেই বলে উদ‍্যোক্তাদের মত ।

শোনা যায় , সতীর ৫১ পীঠের অন‍্যতম পীঠ এই ক্ষীরগ্ৰাম । পুরানো যোগাদ‍্যা মূর্তিটি নাকি হারিয়ে যায় । বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচাঁদ দেবীর মন্দির নির্মাণ করান । তাঁর ই আদেশে হারিয়ে যাওয়া দেবীর মূর্তির অনুকরণে দশভূজা মহিষমর্দিনী মূর্তি তৈরী করেন প্রখ‍্যাত প্রস্তর শিল্পী দাঁইহাটের নবীণচন্দ্র ভাস্কর । রাণী রাসমনির আদেশে যিনি দক্ষিনেেশ্বরের ভবতারিনীর মূূর্তিও তৈরী করেছিলেন । যা পুজো করতেন শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব । কিন্তু হঠাৎ করেই বিগত কয়েকবছর আগে ক্ষীরদিঘী সংস্কারের সময় হারিয়ে যাওয়া দেবী যোগাদ‍্যার মূর্তি উদ্ধার হয় । তারপরেই পাশে আর একটি মন্দির নির্মাণ করে রাখা হয় নতুন মূর্তিটিকে । সারাবছর ই দেবীর দেখা মেলে সতীপীঠে । কিন্তু পুরানো দেবীর মূর্তি ক্ষীরদিঘী তেই ডোবানো থাকে । বছরের বিশেষ কয়েকটি দিন জল থেকে তোলা হয় দেবীকে ।তা ভক্তদের দেখতে দেওয়া হয় না নিয়ম অনুসারে । তবে বৈশাখের সংক্রান্তির সাতসকালে ভক্তরা জল থেকে তুলে আনা দেবীকে দেখতে পান তাই  ভীড় উপচে পড়ে । এবার সম্পূর্ণ অন‍্য পরিস্থিতি । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।